আই সি জের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইসরাইলে হামলা

ইসরায়েল শনিবার রাফাসহ গাজা ভূখণ্ডের বিভিন্ন স্থানে বোমা বর্ষণ করেছে। জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত, ইসরায়েলেরকে দক্ষিণাঞ্চলের এই শহরে সামরিক অভিযান বন্ধ রাখার আদেশ দেয়ার একদিন পরেই এই হামলা চালনো হলো। প্যারিসে চলমান একটি যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চলমান থাকায় এই নির্দেশ দিয়েছিলো জাতিসংষের আদালত।

গত ৭ অক্টোবর হামস হামলা চালালে এই যুদ্ধ শুরু হয়।আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে), হামাসের হাতে এখনো আটক জিম্মিদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছে। এর কয়েক ঘন্টা আগে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ঘোষণা করে যে, তারা গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে আরো তিন জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে।দ্য হেইগ ভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ মান্য করা একটি আইনগত বাধ্যবাধকতা। তবে, আদেশ বলবৎ করার কোনো পদ্ধতি নেই।

আইসিজে, মিশর ও গাজার সীমান্তপথ রাফা ক্রসিং খোলা রাখার জন্যও ইসরায়েলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে। এ মাসের শুরুতে, রাফা শহরে হামলা শুরু করার সময় ইসরাইল এই সীমান্তপথ বন্ধ করে দেয়।ইসরায়েল রাফা অভিযানের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা বদলের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।বরং তারা বলতে চাইছে যে আদালত বিষয়টি ভুল ভাবে নিচ্ছে।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেগবি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, “ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে, এমন কোনো সামরিক অভিযান ইসরায়েল রাফায় এখনও চালায়নি এবং ভবিষ্যতেও চালাবে না।”হামাস গত ২০০৭ সাল থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে।

রাফার বিষয়ে আইসিজের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। তবে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাকি অংশের বিষয়ে আদেশে কোনো উল্লেখ না থাকায় এর সমালোচনা করেছে। আইসিজের রায়ের কয়েক ঘণ্টা পর, শনিবার ভোরে ইসরায়েল গাজায় হামলা চালায়। সেখানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও হামাসের সশস্ত্র শাখার মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।ফিলিস্তিনি প্রত্যক্ষদর্শী এবং এএফপি’র সাংবাদিকরা রাফা এবং মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলার কথা জানিয়েছেন।

যুদ্ধের কারণে গাজা সিটি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে দেইর আল-বালাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছেন ফিলিস্তিনি নারী ওউম মোহাম্মদ আল-আশকা। তিনি বলেন, “আদালতের সিদ্ধান্ত এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ অবসানের জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে বলে আমরা আশা করছি। এখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই।”গাজার মধাঞ্চলের এই শহরের বাসিন্দা মোহাম্মদ সালেহ এএফপিকে বলেন, “ইসরায়েল হচ্ছে সেই রাষ্ট্র, যে নিজেকে আইনের ঊর্ধে মনে করে। এ করাণে, বল প্রয়োগ ছাড়া যুদ্ধ ও সংঘর্ষ থামবে বলে আমি বিশ্বাস করি না।”

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপির হিসাব অনুযায়ী, হামাসের সেই হামলায় এক হাজার ১৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। হামাস তখন ২৫২ জনকে জিম্মি করে।এদের মধ্যে এখনো ১২১ জন গাজায় আটক রয়েছেন। আর, ৩৭ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।অপরদিকে, গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় অন্তত ৩৫ হাজার ৮০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। আর, এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

সোর্স:ভি ও এ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *