বার্তা বিনিময়ের অ্যাপ টেলিগ্রাম-এর প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক পাভেল দুরোভ ফ্রান্সে গ্রেপ্তার হয়েছেন৷ পাভেল রাশিয়ান বংশোদ্ভূত একজন বিলিওনেয়ার৷
ব্যক্তিগত বিমানে শনিবার ফ্রান্সের ল্য বুর্জে বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে। তবে ফরাসি কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তার গ্রেপ্তারের কথা জানায়নি৷ পুলিশ জানিয়েছে, অবতরণের আগেই তাকে গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি নেয় কারণ, তার বিরুদ্ধে ফ্রান্সে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল৷
টেলিগ্রাম এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ডিজিটাল সেবা আইনসহ ইইউ আইন মেনে চলে এবং সে অনুযায়ী প্রতিনিয়ত নিজেদের উন্নত করে যাচ্ছে৷ তারা আরো বলেছে, ‘‘টেলিগ্রামের প্রধান নির্বাহী পাভেল দুরোভের লুকানোর কিছু নেই এবং তিনি কিছু দিন পরপর ইউরোপ ভ্রমণ করেন৷’’
ফ্রান্স ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে দুরোভের৷ ফ্রান্সের পুলিশ জানিয়েছে একটি তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে গেপ্তার করা হয়েছে৷ মডারেটরের অভাবে টেলিগ্রামে বিস্তর অপরাধ ছড়ানো ও পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতার অভাবের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে তারা৷
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ বা প্যারিসের প্রসেকিউটর অফিস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি৷
দুবাইভিত্তিক টেলিগ্রাম অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা দুরোভ৷ ২০১৪ সালে তার প্রতিষ্ঠিত ভিকে নামের একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম থেকে সরকারবিরোধীদের বাদ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে রাশিয়া ত্যাগ করেন তিনি৷
এনক্রিপ্টেড অ্যাপ্লিক্যাশন হিসেবে পরিচিত টেলিগ্রামের ১০০ কোটির মতো ব্যবহারকারী রয়েছে৷ রাশিয়া, ইউক্রেন ও সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের দেশগুলোতে এই অ্যাপ বিশেষভাবে জনপ্রিয়৷ ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম, টিকটক ও উইচ্যাটের পরেই এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক প্ল্যাটফর্ম৷
ফোর্বসের হিসাবে ১৫৫০ কোটি ডলারের মালিক দুরোভ৷ গত এপ্রিলে তিনি বলেছিলেন কয়েকটি সরকার টেলিগ্রাম নিয়ে তার উপর চাপ দিয়ে যাচ্ছে৷ তবে টেলিগ্রামকে তিনি নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই রাখবেন এবং ‘ভূরাজনীতির খেলোয়াড়ে’ পরিণত হতে দেবেন না বলেও উল্লেখ করেন৷
বিশ্লেষকদের মতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে প্ল্যাটফর্মটি ভার্চুয়াল লড়াইয়ের ময়দানে পরিণত হয়েছে৷ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আগে জানিয়েছিল তারা দুরোভের সাক্ষাত চেয়ে প্যারিসকে চিঠি দিয়েছিল৷
সোর্সঃ ডিডব্লিউ