সর্বকনিষ্ঠ থাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে প্যাটাংটার্ন সিনাওয়াত্রা

বাবার দেখানো পথ অনুসরণ করে প্যাটংটার্ন সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন৷ ২০২৩ সালে থাইল্যান্ডের গ্রামাঞ্চলে একটি প্রচারণায় তিনি রাজনীতিতে আগমনের বার্তা দিয়েছিলেন৷

দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা প্যাটংটার্ন সিনাওয়াত্রা থাই রাজনীতিতে পারিবারিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন৷ প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনকে বরখাস্ত করার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আদালতের আদেশে প্যাটংটার্ন সিনাওয়াত্রা তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংসদীয় সমর্থন অর্জন করেন৷

এই জয়ের মাধ্যমে, প্যাটংটার্ন  সিনাওয়াত্রা সর্বকনিষ্ঠ থাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন৷ ইংলাক সিনাওয়াত্রার পর তিনি হতে যাচ্ছেন থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী৷ এর আগে থাকসিন সিনাওয়াত্রা ও ইংলাক সিনাওয়াত্রার নেতৃত্বাধীন সরকার যথাক্রমে ২০০৬ ও ২০১৪  সালে সামরিক বাহিনী দ্বারা উৎখাত হয়েছিল৷

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাজনৈতিক দল ফিউ থাইয়ের মনোনয়ন জেতার পর প্যাটংটার্ন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘দেশকে এগিয়ে যেতে হবে৷ আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, একসঙ্গে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব৷”

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সাড়ে ৬ কোটি মানুষের দেশে আধিপত্যের জন্য লড়াই করা পপুলিস্ট রাজনৈতিক দল ফিউ থাই ও রক্ষণশীল-রাজতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে জোট করার বিষয়টি কল্পনাতীত ছিল৷

বাবার রাজনীতির সুবাদে প্যাটংটার্ন তার শৈশবের শুরু থেকেই থাইল্যান্ড এর অস্থির সময়ের রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহ প্রত্যক্ষ করতে থাকেন৷ মার্চ মাসে এক ভাষণে প্যাটংটার্ন বলেন, ‘‘আমার বয়স যখন আট বছর, তখন আমার বাবা রাজনীতিতে আসেন৷ সেই দিন থেকেই আমার জীবনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে৷”

থাকসিন ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ও সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কৃষি ভর্তুকিতে ব্যয় বৃদ্ধি করেন৷ তার এই নীতি ‘থাকসিনমিক্স’  নামে বেশ পরিচিতি লাভ করে৷ ক্ষমতা গ্রহণের ৫ বছর পর ২০০৬ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি৷

প্যাটংটার্ন মার্চ মাসে দেয়া ভাষণে বলেন, ‘‘মাঝে মাঝে আমি দেয়ালে ঝোলানো আমার বাবার ছবিতে ক্রস করা ও আঁকা দেখতে পেতাম৷ ২০ বছর বয়সে ঘৃণায় ভরা চারিদিক থেকে বের হয়ে আসা খুব কঠিন ছিল৷”

২০২৩ এর অক্টোবরে ফিউ থাই সরকার গঠনের জন্য তাকে দলের নেতা হিসাবে নির্বাচিত করে৷ সেসময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘ফিউ থাই মানুষের জীবিকা যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে৷”

প্যাটংটার্ন গত বছর এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘‘আমি ছোটবেলা থেকেই আমার বাবার সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয় বা কাজের সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ করি৷ তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখনও এর ব্যতিক্রম হয়নি৷”

সোর্সঃ ডিডব্লিউ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *