যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা রাশিয়ার পদার্থবিদদের

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া৷নয় হাজারের মতো রুশ বিজ্ঞানী এক খোলা চিঠির মাধ্যমে এ হামলার নিন্দা জানান৷

 পুতিন স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টাকে ভালোভাবে নেয়নি৷ফলে শুরু হয় গ্রেফতার, নির্যাতন নিপীড়ন। নির্যাতন সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে পদার্থবিদদের ওপর৷তাদের অনেককেই গ্রেফতার করা হয় দেশদ্রোহিতার অভিযোগে৷

তখন রুশ বিজ্ঞানীদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র৷রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের সহজে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু করে হোয়াইট হাউস৷ কিন্তু সেই উদ্যোগ বিশেষ কোনো সাফল্য পায়নি৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রুশ বিজ্ঞানী  জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে তার৷ তারা জানিয়েছেন, কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের বিরোধিতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উদ্যোগ সফল হয়নি৷

মস্কোর অদূরের চেরনোগোলোভকা অঞ্চলের লান্দাউ ইন্সটিটিউট ফর থিওরটিক্যাল ফিজিক্সের পদার্থবিদ মিখায়েল ফাইগেলমান ২০২২ সালের বসন্তে পোল্যান্ডে চলে যান৷ সেখানে গিয়ে ওয়ারশর যুক্তরাষ্ট্র কনসুলেটে ভিসার জন্য আবেদন করেন৷ তার কন্যা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন৷ ভিসার আবেদনে তাই মেয়ের আমন্ত্রণপত্রও সংযুক্ত করেছিলেন মিখায়েল৷

আবেদনপত্র দেখে মিখায়েলের কিছু পাবলিকেশন দেখতে চায় কর্তৃপক্ষ৷ অতীতে পাবলিকেশন দেখানোর পর ভিসা পেতে কখনো সমস্যা হয়নি৷কিন্তু তাতেও ভিসা জোটেনি৷ কারণ জানাতে গিয়ে মিখায়েল বলেন, সাত মাস পর জানানো হয় আমার ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷ আমাকে বলা হয়, ইউএসএ-তে গেলে যে যথাসময়ে ফিরে আসবো তা আমি প্রমাণ করতে পারিনি৷

আবেদন প্রত্যাখ্যানের এমন নজির আরো আছে৷ তবে সেগুলোর সম্পর্কে কেউ সরাসরি কথা বলতে চান না, তাই প্রকৃত সংখ্যা এখনো অজানা৷

নাম প্রকাশ না করে যারা তথ্য দিয়েছেন তাদের একজন জানালেন আরো অবাক করা তথ্য৷ ক্যালিফোর্নিয়ার ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক) থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তিনি৷ বিবাহিত তরুণ বিজ্ঞানী তারপর সস্ত্রীক ভিসার আবেদন করেন৷ ২০২২ সালের গ্রীষ্মে আবেদন করার পর থেকে শুরু হয় অপেক্ষা৷ দুই বছর পর দেখা গেল স্ত্রী ভিসা পেলেও স্বামী পাননি৷ 

ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়ার ওপর নেমে আসে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা৷ 

রাশিয়ার কমপক্ষে ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপরও প্রয়োগ করা হয় নিষেধাজ্ঞা৷ এর ফলে ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যানের হারও বেড়ে যায়৷

রাশিয়ার ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইট ফোরাম ভিনসোকোগো জানায়, কিছুদিন আগেও রুশ সামরিক বাহিনীর কর্মীদের ভিসা দিত যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনের রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার অনেক বেড়েছে৷

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে মোট আবেদনের অন্তত ৪০% প্রত্যাখ্যাত হয়েছে৷ অথচ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু আগে মোট প্রত্যাখ্যাত আবেদন ১৫% থেকে ১৭%-এর মধ্যে ওঠানামা করত৷

সোর্সঃডিডব্লিউ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *