উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সাথে এক সমঝোতায় এসেছেন, যার ফলে তার কয়েক বছর ধরে চলা আইনগত সঙ্কটের সমাধান হবে এবং তিনি ব্রিটেনে কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
সমঝোতার অংশ হিসেবে অ্যাসাঞ্জ তাঁর বিরুদ্ধে আনা একটি ফৌজদারি অভিযোগ স্বীকার করবেন বলে আদালতে পেশ করা নথিপত্রে জানা গেছে।
এই আইনগত লড়াই একাধিক মহাদেশে বিস্তৃত ছিল, এবং তার মূল বিষয় ছিল উইকিলিকসে এক রাশ গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করা।
অ্যাসাঞ্জ বুধবার (২৬ জুন) পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের আওতাভুক্ত মারিয়ানা আইল্যন্ডস-এর ফেডেরাল আদালতে হাজিরা দেবেন। সেখানে তিনি এস্পিওনেজ অ্যাকট-এর অধিনে, গোপনীয় জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য বেআইনি ভাবে সংগ্রহ এবং বিতরণ করার অভিযোগ স্বীকার করবেন।
আদালতে পেশ করা চিঠিতে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এ’তথ্য জানিয়েছে।
অভিযোগে স্বীকারোক্তি, যেটা বিচারককে অনুমোদন করতে হবে, এই ফৌজদারি মামলা এবং এই প্রকাশকের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দীর্ঘ প্রচেষ্টার হঠাৎ সমাপ্তি ঘটাবে। অ্যাসাঞ্জের গোপন তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট তাঁকে অনেক স্বাধীন গণমাধ্যমের কাছে তাকে প্রিয় করে তোলে।
অন্য দিকে, তদন্তকারীরা বারবার বলেছে, আসঞ্জ স্পর্শকাতর তথ্য রক্ষার আইন ভঙ্গ করেন এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলেন।
ধারনা করা হচ্ছে, মারিয়ানা আইল্যান্ডস-এর সবচেয়ে বড় দীপ সাইপানে স্বীকারোক্তি এবং সাজা ঘোষণার পর অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়া ফিরে যাবেন। মামলার শুনানি সাইপানে হচ্ছে কারণ, অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের মূল্ ভূখণ্ডে যেতে চান নি।
এই সমঝোতার মূল দিক হচ্ছে আসঞ্জ অপরাধ স্বীকার করবেন, এবং একই সাথে কারাগারে আর কোন সময় কাটাতে হবে না। তিনি লন্ডনে একুয়েডর দূতাবাসে কয়েক বছর আশ্রয় নিয়েছিলেন। এর পর তিনি পাঁচ বছর ব্রিটেনের বেলমারশ কারাগারে আটক ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবীরা অ্যাসাঞ্জের অপরাধের জন্য পাঁচ বছরের সাজায় একমত হয়েছেন, যে পাঁচ বছর তিনি ইতোমধ্যেই কারাগারে কাটিয়েছেন।
গত মাসে অ্যাসাঞ্জ তাঁর প্রত্যর্পণ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি পান। তাঁর আইনজীবীরা যুক্তি দেখান যে, তিনি আমেরিকান আদালতে বাক স্বাধীনতা পাওয়ার যথেষ্ট নিশ্চয়তা যুক্তরাষ্ট্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ইরাক এবং আফগানিস্তানে প্রশ্নবিদ্ধ সামরিক কর্মকাণ্ড প্রকাশ করার জন্য অ্যাসাঞ্জ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছেন। উইকিলিকস -এর প্রকাশ করা মধ্যে ছিল ২০০৭ সালের একটি ভিডিও, যেখানে দেখা গেল বাগদাদে একটি আমেরিকান আপাচে হেলিকপ্টার আক্রমণে ১১ জন নিহত হবার ঘটনা, যার মধ্যে রয়টার্সের দুজন সাংবাদিক ছিলেন।
সোর্সঃ-ভিওএ