যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিউইয়র্কের নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত জুরি ৩৪টি ফৌজদারি অভিযোগে অপরাধী সাব্যস্ত করার এক দিন পর তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন জানিয়েছেন।
২০১৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের ফলকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করার দায়ে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়।
শুক্রবার ম্যানহাটনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ট্রাম্প টাওয়ারে বসে ছোট একদল সংবাদদাতা ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বলেন, “বিচারিক প্রক্রিয়ায় কারচুপি হয়েছে”।
৩৩ মিনিট ধরে ট্রাম্প এই মামলা, কাউন্টি ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়ে একগাদা অলিখিত অভিযোগ করেন। কোনো প্রমাণ ছাড়াই তিনি দাবি করেন যে এই মামলার বিচারক দুর্নীতিপরায়ণ ও অন্যায্য এবং নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের আইনি প্রক্রিয়া বাইডেন ও সরকারি কর্মকর্তাদের ইশারায় পরিচালিত হয়।
ট্রাম্প তাঁর মন্তব্যে আরও বলেন,“আমি এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে সম্মানিত, কারণ আমরা আমাদের সংবিধানের জন্য সংগ্রাম করছি”।
হোয়াইট হাউসে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বক্তব্যের শুরুতে বাইডেন উল্লেখ করেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সর্বসম্মতিক্রমে যে রায় এসেছে, তার পেছনে রয়েছে পাঁচ সপ্তাহের শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ যা জুরির সদস্যরা শুনেছেন। তিনি আরও জানান, সাবেক প্রেসিডেন্টকে (ট্রাম্প) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য সব ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার বাইডেন বলেন, “এবং রায় পছন্দ হয়নি বলেই কারচুপির অভিযোগ তোলা যে কারও জন্য একটি বেপরোয়া, বিপদজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।”
টানা ২ দিন ধরে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় নিয়ে ১২ সদস্যের জুরি বৃহস্পতিবার রায় দেন। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসাবে ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত ও সেই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ট্রাম্প।
রায়ের পরপরই ট্রাম্পের আইনজীবী টড ব্লানশে এই রায় বাতিলের আবেদন করলেও নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হুয়ান মেরচান এই আবেদন নাকচ করেন।
আদালতকক্ষে রায় শোনার সময় নিরুত্তাপ ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু আদালত কক্ষ থেকে বের হয়ে এসে তিনি জানান, এই রায় “লজ্জাজনক”।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার অভিযানকারীরা তারপর তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি ইমেইল ছাড়েন। তাতে বড় বড় অক্ষরে সাবেক প্রেসিডেন্টের এই উক্তি লেখাছিল , “ আমি একজন রাজনৈতিক বন্দী”।
নিশ্চিতভাবেই ট্রাম্প এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন এবং একইসঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও কোনো বাধা ছাড়াই লড়তে পারবেন। ফৌজদারি অভিযোগে অপরাধী সাব্যস্ত হলেও প্রেসিডেন্ট হওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের কোনো সাংবিধানিক বাধা নেই ।
সোর্সঃভিওএ