কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে পাওয়া মাংসের টুকরো এবং চুল সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের কিনা তা পরীক্ষার জন্য শিগগিরই কলকাতায় যেতে পারেন তার মেয়ে।
আগামী দু’দিনের মধ্যেই কলকাতায় আসার কথা তার। উদ্ধার করা মাংসের টুকরো এবং চুলের ডিএনএ-র সঙ্গে আনোয়ারুলের মেয়ের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। আনোয়ারুল আজীমের দুই মেয়ে। তাদের মধ্যে মুমতারিন ফেরদৌস দরিন কলকাতায় বাবার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
মঙ্গলবার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাঙ্ক, বর্জ্য নিষ্কাশনের পাইপ থেকে মাংসের টুকরো এবং চুল উদ্ধার হয়েছিল। সিআইডির তদন্তকারীদের সন্দেহ, এ নিহত সংসদ সদস্য আনোয়ারুলের হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ইতিমধ্যেই নমুনাগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সিআইডির কাছে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাঙ্কে তল্লাশি চালানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দাপ্রধান হারুন অর রশিদ। এই হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশে আটক তিন জন এবং পশ্চিমবঙ্গে আটক জ়ুবেরকে জেরা করে তেমনটাই সন্দেহ হয়েছিল হারুনের।
নিহতের বাল্যবন্ধু আখতারুজ্জামান শাহিনসহ চার জনের বিরুদ্ধে ‘লুকআউট নোটিস’ জারি করেছে সিআইডি। কলকাতায় এসে ঝিনাইদহের সাংসদ খুনের তদন্ত করছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দাপ্রধান হারুন। খুনের তদন্তে কলকাতায় এসে রবিবার নিউ টাউনের সেই ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দাপ্রধান, যেখানে আনোয়ারুলকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সঙ্গে ছিল তার নেতৃত্বাধীন তদন্তকারীদের একটি দল। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি কর্মকার্তারাও ছিলেন। তিনি দাবি করেন, ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে আনোয়ারুলকে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, সাংসদের দেহাংশ না মিললে তদন্ত থামবে না।
তদন্তকারী কর্মকার্তাদের অনুমান, আনোয়ারুল খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান কলকাতা থেকে কাঠমান্ডু হয়ে পালিয়েছেন। কোথায় গিয়েছেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে অনুমান, হয় দুবাই, নয়তো অ্যামেরিকায় পালিয়েছেন অভিযুক্ত।
আনোয়ারুল খুনের ঘটনায় প্রায় প্রতি দিনই কোনো না কোনো চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। নিউ টাউনের ফ্ল্যাটটি ২০১৮ সালে ভাড়া নিয়েছিলেন মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান। সিআইডির অনুমান, ঘটনার দিন ওই ফ্ল্যাটেই আনোয়ারুলকে নিয়ে আসা হয়। তার পর খুন করে প্রমাণ লোপাট করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই আখতারুজ্জামানের খোঁজ চলছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, খুনের ঘটনার পর পরই দেশ ছেড়েছেন তিনি। প্রথমে কলকাতা থেকে নেপালে যান আখতারুজ্জামান। তবে পরে সেখান থেকেও পালিয়েছেন তিনি।
আখতারুজ্জামান নেপালে কোথায় উঠেছিলেন, তার পর সেখানে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন ইত্যাদি প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই সিআইডির একটি দল সে দেশে যাচ্ছে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় আরও এক অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে থাকতে পারেন বলে সিআইডি সূত্রে খবর। এই অভিযানে সিআইডি গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছেন সিয়ামও।
সোর্স : আনন্দবাজার পত্রিকা