খেজুর পানিতে ভিজিয়ে খেলে মিলবে যেসব উপকারিতা

ড্রাই  ফ্রুটস খেতে অনেকেই ভালোবাসেন। এই তালিকায় যোগ করতে পারেন খেজুর। স্বাস্থ্যকর হালকা খাবার হিসেবে এই ফলের তুলনা নেই। রোজই ২-৩ টি করে খেজুর খাওয়া যাবে। কাঠবাদামের মতো খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেটা খেলে বেশি উপকার পাবেন। তবে পানিতে ভেজানো খেজুর খালি পেটে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া সম্ভব।

খেজুর হজম করা একটু কষ্টকর। তাই যারা রোজ খেজুর খাচ্ছেন পানিতে ভিজিয়ে খান। এতে সহজেই হজম হয়ে যাবে। পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর থেকে বীজ আলাদা করে নেওয়াও সহজ। ফলে খেতেও সুবিধা হবে। ন্যাচারাল সুইটনার হিসেবেও খেজুর খেতে পারেন।

যেদিন খাবেন তার আগের দিন রাতে কাচে পাত্রে পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রাখুন। সকালে উঠে খালি পেটে খেয়ে নিন। খালিপেটে ভিজিয়ে রাখা খেজুর খেলে যেসব উপকারিতা মেলে-

ত্বক ভালো রাখে

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি, যা ত্বকের কোষগুলোর ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। খেজুর ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনের মাত্রা বাড়ায়। যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখে, ফলে সহজে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না এবং ত্বক আরও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত দেখায়। এ ছাড়া খেজুরে উপস্থিত পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড ত্বককে ফ্রি-র‍্যাডিক্যালের হাত থেকে বাঁচায়। যা ত্বকের অকালবার্ধক্য প্রতিরোধে বেশ কার্যকর। নিয়মিত খেজুর খেলে ত্বকের শুষ্কতা কমে এবং প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। শুধু ত্বক নয়, এতে উপস্থিত বায়োটিন ও আয়রন চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল ঝরা কমায় এবং চুলের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে; অর্থাৎ এটি ত্বকের পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।

হজমশক্তি বৃদ্ধি করে

খেজুরে উপস্থিত উচ্চমাত্রার ফাইবার হজমক্রিয়া উন্নত করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে। এটি অন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে। যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য খেজুর হতে পারে একটি প্রাকৃতিক সমাধান। নিয়মিত খেজুর খেলে গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হ্রাস পায়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

যাঁদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, যা শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও পলিফেনল হৃৎপিণ্ডের প্রদাহ কমিয়ে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে  

খেজুর আয়রনের অত্যন্ত চমৎকার একটি উৎস, যা শরীরে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষভাবে, যাঁরা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী।

হাড়ের গঠন মজবুত করে

হাড় মজবুত রাখতেও খেজুরের জুড়ি নেই। হাড়ের জন্য ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম অত্যন্ত জরুরি, যা খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। নিয়মিত খেজুর খেলে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমে, হাড়ের ক্ষয়প্রক্রিয়া ধীর হয়, বয়সজনিত কারণে হাড়-দুর্বলতা প্রতিরোধ হয়। বিশেষভাবে বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী ও বেড়ে ওঠা শিশুদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *